মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানীর ঘটনা বাড়ছে চট্টগ্রামে। রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে গেলো তিন মাসে এরকম অন্তত ১০টি চালান আটক করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ। এসব চালানে শুল্কমুক্ত পণ্যের বিপরীতে কয়েকশো ভাগ শুল্কের পণ্য যেমন আনা হয়েছে, পাশাপাশি অর্থপাচারের উদ্দেশ্যে মূল্যবান পণ্যের কথা বলে ইট, বালি এমনকি খালি কন্টেইনারও আনা হয়েছে। কাস্টমস কমিশনার বলছেন, শুল্ক ফাঁকিসহ অর্থপাচারের প্রবণতা থেকেই এমন ঘটনা ঘটছে। আর ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, কাস্টমস বিভাগের সহায়তা ছাড়া এতবড় অনিয়ম সম্ভব নয়।
গেল ৭ মে ঢাকার লোটাস সার্জিক্যাল নামের একটি আমদানীকারক প্রতিষ্ঠানের নামে তিনটি কন্টেইনার আসে চট্টগ্রাম বন্দরে। যাতে ৭শো হুইল চেয়ার আর সাড়ে ৪শো ওয়াকার থাকার কথা ছিলো। কিন্তু রাষ্ট্রীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থার দেয়া তথ্যে চালানটি চ্যালেঞ্জ করে কাস্টমস। কন্টেইনার খুলে দেখা যায় একটিতে কয়েকটি হুইল চেয়ার থাকলেও অন্য দুটি কন্টেইনারে আছে ইট আর বালি। শুধু এই একটি চালানের বিপরীতে দেশ থেকে চলে গেছে ৭১ হাজার ডলার। গেল তিন মাসে এমন অন্তত ১০টি বড় আমদানী চালানের সন্ধান পেয়েছে কাস্টমসের শুল্কগোয়েন্দা বিভাগ।
ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, কাস্টমস বিভাগের সহায়তা ছাড়া মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে আনা পণ্য খালাস করা অসম্ভব। তাই ব্যবসায়ীদের সম্পর্কে তদন্ত করার আগে কস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর নজরদারি বাড়ালে এমন অনিয়ম রোধ করা সম্ভব। আর চট্টগ্রাম চেম্বার বলছে, শুধু মুদ্রা পাচার বা আমদানীকারকের অসততাই নয়, বিদেশী সাপ্লায়ার বা রপ্তানিকারকের মাধ্যমেও প্রতারিত হচ্ছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। এ থেকে উত্তরণে সরকারিভাবে কূটনৈতিক আলোচনা বাড়ানোর দাবিও জানান ব্যবসায়ী নেতারা। মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানীর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা পাচারের প্রবণতা রোধে গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে একজন ডেপুটি কমিশনারের নেতৃত্বে ৮ সদস্যবিশিষ্ট মানিলন্ডারিং সেল গঠন করেছে কাস্টমস। কিন্তু গেল ৮ মাসে ওই কমিটি কোন অগ্রগতি দেখাতে পারেনি।